Tag Archives: গাদ্দাফী

লিবিয়া সিভিল ওয়ার গাইড


অনেকেই ইদানীং নতুন করে শুরু হওয়া লিবিয়া যুদ্ধ ফলো করছেন। কিন্তু লিবিয়ার পরিস্থিতি এতো জটিল, কনটেক্সট জানা না থাকলে কিছু ভুল বোঝাবোঝির সৃষ্টি হতে পারে। সেজন্য এখানে কিছু সহজ টিপস দিলাম:


১। “আর্মি” শব্দটাকে সিরিয়াসলি নিবেন না।

সত্যিকার আর্মি বলতে লিবিয়াতে কিছু নাই। “লিবিয়ান ন্যাশনাল আর্মি” বা এলএনএ বলতে মূলত জেনারেল হাফতারের বাহিনীকে বোঝানো হয়। কিন্তু সেটা ঠিক ট্রেডেশনাল আর্মি না, আর চরিত্রগত ভাবে ন্যাশনাল তো না-ই।

হাফতারের বাহিনীর দুইটা অংশ। একটা অংশ অর্থাৎ কিছু ব্রিগেড সত্যি সত্যিই প্রফেশনাল আর্মির স্ট্রাকচার ফলো করে। এদের সদস্যরা এবং কমান্ডাররা অনেকেই গাদ্দাফীর আমলের সেনাবাহিনী থেকে আসা। এছাড়াও হাফতার নিজেও গত সাড়ে চার বছরে অনেক নতুন সেনাসদস্যকে ট্রেনিং দিয়ে নিজের বাহিনীকে মোটামুটি একটা অর্গানাইজড স্ট্রাকচারে রূপ দিয়েছেন।

Continue reading লিবিয়া সিভিল ওয়ার গাইড

গাদ্দাফীকে উৎখাত করতে গিয়ে আমেরিকা যেভাবে ভজগট পাকিয়ে ফেলেছিল!


আশির দশকে আমেরিকা গাদ্দাফীকে হত্যার আয়োজন করছিল।

শুধু আমেরিকা বললে ভুল হবে। সেসময় বিভিন্ন দেশের সাথে গাদ্দাফীর সম্পর্ক খারাপ ছিল। সিআইএর তথ্য অনুযায়ী আমেরিকা ছাড়াও ফ্রান্স, চাদ, মিসর, সুদান, মরক্কো, সৌদি আরব এমনকি ইরাক পর্যন্ত গাদ্দাফীকে ক্ষমতাচ্যুত করতে আগ্রহী বিদ্রোহীদেরকে সাহায্য করে আসছিল।

গাদ্দাফীকে সরাতে চাওয়ার জন্য বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন রকম কারণ ছিল। ফ্রান্স এবং আমেরিকার প্রধান কারণ ছিল চাদের উপর গাদ্দাফীর হস্তক্ষেপ। চাদ ছিল ফ্রান্সের কলোনী। স্বাধীনতার পরেও সেখানে ফ্রান্সের একচ্ছত্র আধিপত্য ছিল। কিন্তু গাদ্দাফী যখন ১৯৭৮ সালে চাদের একটি অংশকে লিবিয়ার ভূখন্ড দাবি করে সেখানে সেনাবাহিনী পাঠায়, তখনই প্রধানত ফ্রান্স এবং সেই সাথে আমেরিকা তাকে ক্ষমতাচ্যুত করার সম্ভাবনা বিচরণ করতে শুরু করে।

Continue reading গাদ্দাফীকে উৎখাত করতে গিয়ে আমেরিকা যেভাবে ভজগট পাকিয়ে ফেলেছিল!

ম্যারি কোলভিনের প্রাইভেট ওয়ার


ফিচার ইমেজে গাদ্দাফীর সাথে ম্যারি কোলভিনের যে দৃশ্যটা দেখা যাচ্ছে, সেটা বাস্তবের না, A Private War সিনেমার। তবে বাস্তবেও সানডে টাইমসের সাংবাদিক ম্যারি কোলভিন গাদ্দাফীর সাক্ষাৎকার নিয়েছিলেন। একবার না, একাধিক বার।

১৯৮৬ সালে রিগ্যান প্রশাসন যখন লিবীয় নেতা মোয়াম্মার আল-গাদ্দাফিকে হত্যার উদ্দেশ্যে তার বাসভবনের উপর বিমান হামলা (অপারেশন এল-ডোরাডো ক্যানিয়ন) পরিচালনা করে, তখন ম্যারি কোলভিনই ছিলেন প্রথম সাংবাদিক, যিনি গাদ্দাফির সাক্ষাৎকার নিয়েছিলেন।

বাস্তবে গাদ্দাফীর সাথে ম্যারি কোলভিন; Image Source: BBC

পরবর্তীতে ২০১১ সালে গৃহযুদ্ধ শুরুর পরেও গাদ্দাফির প্রথম সাক্ষাৎকার নিয়েছিলেন তিনি। ইনফ্যাক্ট গাদ্দাফী প্রশাসন ম্যারি কোলভিনের রিকোয়েস্টে সাড়া দিয়ে মোট তিনজন সাংবাদিককে গাদ্দাফীর সাথে সাক্ষাৎ করার অনুমতি দেয়। বাকি দুইজন সাংবাদিক কারা হবেন, সেটা সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতাও তারা ম্যারির উপরেই ছেড়ে দেয়।

Continue reading ম্যারি কোলভিনের প্রাইভেট ওয়ার

গণমানুষের নেতা গাদ্দাফী যেভাবে স্বৈরশাসক হলেন


সত্তরের দশকের গাদ্দাফী ছিল সত্যিকার অর্থেই জনগণের নেতা। সে সময় প্রায় প্রতিদিন গাদ্দাফী রাস্তায় বের হতো। একা, কোনো বডিগার্ড ছাড়া। সে সময় ত্রিপলীতে থাকা বাংলাদেশীদের অনেকেও গাদ্দাফীকে সরাসরি দেখেছে। কোনো অনুষ্ঠানে না, হঠাৎ কোনো রাস্তায়।

নিজের ফোক্স ওয়াগন গাড়িটা নিয়ে গাদ্দাফী একেক দিন একেক জায়গায় চলে যেত। কোনো স্কুলে, ইউনিভার্সিটিতে, মার্কেটে, হসপিটালে, ব্যাংকে। অথবা জনগণের ভীড়ে, ত্রিপলীর আশেপাশের কোনো গ্রামে। গিয়ে সাধারণ মানুষের সাথে মিশত, কথা বলত, তাদের মতামত জানতে চাইত।

Continue reading গণমানুষের নেতা গাদ্দাফী যেভাবে স্বৈরশাসক হলেন

গাদ্দাফীর সাথে সারকোজির প্রতারণা


নিকোলাস সারকোজি পুলিশ কাস্টডিতে। ইলেকশন ক্যাম্পেইনের জন্য গাদ্দাফীর কাছ থেকে ফান্ডিং নেওয়ার অভিযোগে তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে।

২০০৭ সালের নির্বাচনে ক্যাম্পেইনের জন্য গাদ্দাফী সারকোজিকে ৫০ মিলিয়ন ডলার দিয়েছিল। বলা যায় গাদ্দাফী নিজ হাতে সারকোজিকে ক্ষমতায় বসিয়েছিল। অথচ সেই সারকোজি বলতে গেলে একক প্রচেষ্টায় গাদ্দাফীর বিরুদ্ধে জাতিসংঘে হামলার অনুমোদন করায় এবং তা পাশ হতে না হতেই বিমান হামলা শুরু করে।

Continue reading গাদ্দাফীর সাথে সারকোজির প্রতারণা

১৭ই ফেব্রুয়ারির বিপ্লব: গাদ্দাফীর পতনের জানা-অজানা ‌অধ‍্যায়


২০১১ সালের ১৭ই ফেব্রুয়ারি। আরব বসন্তের ধারাবাহিকতায় সেদিন লিবিয়াতেও শুরু হয়েছিল গাদ্দাফীর বিরুদ্ধে আন্দোলন, যার ধারাবাহিকতায় আট মাস পর পতন ঘটে বেয়াল্লিশ ধরে ক্ষমতায় থাকা লৌহ মানব মোয়াম্মার আল-গাদ্দাফীর। কিন্তু ঠিক কী কারণে, কীভাবে শুরু হয়েছিল এ বিদ্রোহ? আর ঠিক কীভাবেই পতন হয়েছিল গাদ্দাফীর? সেই ইতিহাসই তুলে ধরলাম এ লেখায়। লেখাটি মানবজমিন পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছিল।

Continue reading ১৭ই ফেব্রুয়ারির বিপ্লব: গাদ্দাফীর পতনের জানা-অজানা ‌অধ‍্যায়

গাদ্দাফী এবং আরাফাত – এক কালের দুই বিপ্লবী


প্রথম জীবনে গাদ্দাফী ছিলেন বিপ্লবী চরিত্রের নেতা। তার মূলনীতিগুলোর মধ্যে অন্যতম ছিল আরব জাতীয়তাবাদ প্রতিষ্ঠা করা এবং ইসরায়েলকে উচ্ছেদ করা। লিবিয়াতে ক্ষমতায় আসার পরপরই গাদ্দাফী লিবিয়ার সম্পূর্ণ ইহুদী সম্প্রদায়কে বহিষ্কার করেছিলেন। অবশ্য এটা কতটুকু জাস্টিফাইড ছিল, সেই আলোচনায় এখানে গেলাম না।

Continue reading গাদ্দাফী এবং আরাফাত – এক কালের দুই বিপ্লবী

গাদ্দাফীর শাসণামলের ১০টি ফ্যাক্ট: সত্য না মিথ্যা?


মোয়াম্মার আল-গাদ্দাফীর গুণগান সম্বলিত একটি ভাইরাল লিস্ট পাওয়া যায় ইন্টারনেটের বিভিন্ন সাইটে, যেখানে গাদ্দাফীর সময়ে লিবিয়ানরা কত সুখে-শান্তিতে ছিল, সেটি বোঝানোর জন্য ১০টি বা ১২টি পয়েন্ট উল্লেখ করা হয়। লিস্টটি অত্যন্ত জনপ্রিয়, দুদিন পরপরই কেউ না কেউ এটি শেয়ার করে, এবং অবধারিতভাবে আমার ফেসবুক ফ্রেন্ডদের কেউ না কেউ আমাকে সেখানে ট্যাগ করে এর সত্যতা জানতে চায়। অনেক দেরিতে হলেও শেষ পর্যন্ত এর সত্যতা যাচাইমূলক একটি লেখা লিখেই ফেললাম।

Continue reading গাদ্দাফীর শাসণামলের ১০টি ফ্যাক্ট: সত্য না মিথ্যা?

‘লিবিয়ার শতবর্ষের নির্জনতা’ : মোজাম্মেল হোসেন ত্বোহার সাক্ষাৎকার


ইরফানুর রহমান রাফিন একজন জনপ্রিয় ব্লগার। সম্প্রতি তিনি নিজের ব্লগে ধারাবাহিকভাবে বিভিন্ন ব্যক্তির সাক্ষাৎ প্রকাশ করা শুরু করেছেন। প্রথম সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন জনপ্রিয় রাজনৈতিক সমালোচক অনুপম দেবাশীষ রয়ের। আর দ্বিতীয় সাক্ষাৎকারটি ছিল আমার।

এই সাক্ষাৎকারে লিবিয়ার সংক্ষিপ্ত ইতিহাস, গাদ্দাফীর উত্থান, তার শাসণামলের ভালোমন্দ দিকগুলো, ২০১১ সালের বিদ্রোহের সূচনা, দেশী-বিদেশী শক্তির প্রভাব, বিদ্রোহ পরবর্তী লিবিয়ার রাজনীতি, আল-ক্বায়েদা-আইসিসের উত্থান, তাদের ক্ষমতার উৎস, লিবিয়ার ভবিষ্যৎ সহ অনেক কিছু উঠে এসেছে।

মূল সাক্ষাৎকারটি পড়তে পারেন এই লিংক থেকে

Continue reading ‘লিবিয়ার শতবর্ষের নির্জনতা’ : মোজাম্মেল হোসেন ত্বোহার সাক্ষাৎকার

গাদ্দাফীর অধীনে আমাদের শেষ রোযা এবং শেষ ঈদের স্মৃতি


ঈদ এক বছর পরপরই আসে। বা আরও নির্দিষ্ট করে বললে একটা ঈদ আসে দুই মাস পরে,আরেকটা আসে দশমাস পরে। কিন্তু আমাদের জন্য এবার ঈদ এসেছে দুই বছর পরে। কারণ গত বছরের কোন ঈদই আমরা ঠিকভাবে পালন করতে পারিনি। রোযার ঈদের সময় আমরা ছিলাম চারদিকে বিদ্রোহী সৈন্যদের দ্বারা অবরুদ্ধ শহরে। আর কুরবানীর ঈদের সময় ছিলাম মাত্র যুদ্ধ কাটিয়ে উঠা বিদ্ধস্ত শহরে। জীবনে প্রথমবারের মতো কুরবানী ছাড়াই ঈদ উদযাপন করতে বাধ্য হয়েছিলাম আমরা।

Continue reading গাদ্দাফীর অধীনে আমাদের শেষ রোযা এবং শেষ ঈদের স্মৃতি